এখন একটি গ্যাসের চুলার জন্য ৭৫০ টাকা ও দুই চুলার জন্য ৮০০ টাকা বিল দিতে হয়; প্রস্তাব অনুমোদন
হলে সেখানে বিল দিতে হবে যথাক্রমে ১০০০ ও ১২০০ টাকা। একইভাবে মিটারযুক্ত চুলার ক্ষেত্রে প্রতি ঘনমিটার
গ্যাসের দাম ৯ টাকা ১০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১৩ টাকা ৬৫ পয়সা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।

পাশাপাশি গ্যাস সঞ্চালন লাইনের চার্জ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি
লিমিটেড (জিটিসিএল)। এসব প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে গণশুনানি করছে বিইআরসি। ১১ জুন থেকে ১৪ জুন
পর্যন্ত রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মিলনায়তনে চলে শুনানি।
শুনানি শেষে বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিইআরসি। আজ (রোববার) বিকেল ৪টায়
বিইআরসি অফিসে সেই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে। এ ঘোষণায় গ্যাসের দাম বাড়তে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে
জানা গেছে।

সূত্র থেকে পাওয়া

বিইআরসি সূত্র জানায়, সব শ্রেণির গ্যাসের দাম গড়ে ৬৬ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বিতরণ
কোম্পানিগুলো। গৃহস্থালিতে ব্যবহৃত দুই চুলার গ্যাসের বিদ্যমান দাম ৮৫০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা
নির্ধারণ করতে চায় তারা। সিএনজির দাম বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি হতে পারে।

গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর সর্বশেষ গত বছরের মে মাসে শুনানি গ্রহণ করেছিল বিইআরসি। ২০১৮
সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে বর্ধিত মূল্যহার অনুযায়ী গ্যাসের দাম পরিশোধ করতে হবে বলে জানিয়েছিলেন
সংশ্লিষ্টরা। তবে নির্বাচনের বছরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় তখন বর্ধিত মূল্যহার ঘোষণা স্থগিত রেখেছিল
বিইআরসি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, মূলত আমদানি করা তরল প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) কারণে এ খাতের ব্যয় বেড়েছে।
গত বছর পেট্রোবাংলা-এক্সিলারেট এনার্জির এলএনজি পাইপলাইনে যুক্ত হয়েছে। এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে
সামিটের এলএনজিও পাইপলাইনে যুক্ত হবে। সব মিলিয়ে চলতি বছর ১০০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সমতুল্য
এলএনজি গ্রিডে আসবে, যা বর্তমানে দেশে উত্পাদিত গ্যাসের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। ব্যয়বহুল এ তরলীকৃত

গ্যাসের দাম সমন্বয়ের জন্যই গ্রাহক পর্যায়ে দাম বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।

সর্বশেষ দাম বাড়ানো হয়

সর্বশেষ ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে গ্যাসের দাম গড়ে ২২ দশমিক ৭০ শতাংশ বাড়ানো হয়। সে বছরের মার্চ ও
জুলাই থেকে দুই ধাপে তা কার্যকর করার কথা ছিল। আদালতের রায়ের কারণে প্রথম ধাপের দাম বৃদ্ধি কার্যকর
হলেও দ্বিতীয় ধাপ কার্যকর হয়নি।

অবশ্য দেশের জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ মুহূর্তে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি উচিত হবে না। তাদের মতে, সর্বশেষ
গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার গত বছর অক্টোবরে। সে বছরের ১১-২১ জুন পর্যন্ত
গণশুনানিও করে বিইআরসি। কিন্তু নির্বাচন সামনে থাকায় গ্যাসের বর্ধিত মূল্য দিতে হয়নি গ্রাহকদের।

সঞ্চালন ও বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রস্তাব অনুযায়ী বাড়তি দাম (এক বছরের জন্য সাড়ে চার হাজার কোটি
টাকা) সরকার দিয়েছে। মূলত তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির ফলে ছয় হাজার কোটি টাকার
ঘাটতি মেটাতে এই অর্থ দেয় সরকার। এছাড়া গ্যাস কোম্পানিগুলো এখন লাভে রয়েছে। তাই তারা দাম বৃদ্ধির
প্রস্তাব করতে পারে না।

Leave your comments