কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলা পাগলারহাট গ্রামের হামিদুল মিয়া আর পূর্ণিমা খাতুন।সম্প্রতি বেশ জাকজমকভাবেই তাদের বিয়ে হয়েছে।বর হামিদুল মিয়ার বয়স মাত্র ১৮।আর পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়া কনে পূর্ণিমা খাতুন পেরিয়েছে ১২র ঘর।পারিবারিকভাবেই তাদের বিয়ে হয়েছে নিমন্ত্রণে আসেন শখানেক অতিথি।

শুধু হামিদুল-পূর্ণিমা নয়; চরাঞ্চলে তাদের মতো বাল্যবিয়ে হয়ে সংসার করছে অনেকেই। মহামারিতে স্কুল বন্ধ থাকায় অনেক বাবা-মা ই কমবয়সী ছেলে-মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিচ্ছেন। প্রশাসন খবর পেয়ে অনেক বিয়ে বন্ধ করছেন। তবে, আজানাই থেকে যাচ্ছে বেশিরভাগ ঘটনা। পরবর্তীতে যাদের বেশিরভাগই জীবন পার করছেন নানা সঙ্কটের মধ্য দিয়ে। অথচ এসব বাল্যবিয়েতে গ্রামের চেয়ারম্যান বা মেম্বাররা কেউ প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করেন না।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনাকালে উত্তরের বিভিন্ন এলাকায় সেই সংখ্যাটা আরও বেড়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বেড়েছে ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও।অভিভাবকরা তাই বিয়ে দিয়ে দিচ্ছেন।বেসরকারি একটি উন্নয়ন সংস্থার তথ্য বলছে, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২০ সালের আগস্ট পর্যন্ত কুড়িগ্রামে বাল্যবিয়ে হয় ২ হাজার ৬শ তিনটি।বিয়ে বন্ধ হয়েছে ৯শ ৬১টি।২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বাল্যবিয়ে হয়েছে ৩শ ৩৯টি, আর বন্ধ হয় ৭১টি।শুধুমাত্র আগস্টেই হয়েছে ৪৭টি বাল্যবিয়ে।ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান জানান, বল্যবিবাহ কোনক্রমেই বন্ধ হচ্ছে না।করোনাকালে আগের চেয়ে বাল্যবিবাহের হার বৃদ্ধি হয়েছে।এসব বিয়ে বন্ধে প্রশাসন কিংবা জনপ্রতিনিধিরা বাধা দিলেও পরবর্তীতে গোপনে বিয়ে হয়ে যায়।একবার বিয়ে হয়ে গেলে মানবিক কারণে আর করার কিছু থাকে না।ছোট-বড় মিলিয়ে কুড়িগ্রাম চর রয়েছে চার শতাধিক।মূলত এসব এলাকাতেই বাল্যবিয়ের প্রবণতা বেশি।

Leave your comments