আজ মুক্তিযুদ্ধের মহান এই সংগঠককে স্মরণ করে দোয়া মাহফিল ও স্মরণ সভা করেছে উলিপুর পৌর আওয়ামীলীগ শাখা। উক্ত দোয়া ও স্মরণ সভা বাদ যোহর উলিপুর সরকারী ডিগ্রী কলেজে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন, আব্দুল হাফিজ (বাচ্চা মিয়া)-র ছেলে উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মিজানুর রহমান লিটন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি আবু সাঈদ সরকার, পৌর অাওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি নাজমুল হক মানিক প্রমুখ।
সভা শেষে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়, দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন হাফেজ বদিয়ার রহমান।
তার ছেলে উপজেলা প্রেস ক্লাব উলিপুরের সভাপতি ও যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান লিটন তার বাবার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অাবেগআপ্লুত হয়ে যান। তিনি বলেন, অামার বাবা কুড়িগ্রাম মহকুমার আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হলেও তাকে কেউ এতোদিন স্মরণ করেনি, যেটার কারণ অামি জানি না! তবে আজকে আমার বাবার মৃত্যুর ২৫ বছর পর তাকে স্মরণ করায় আমি নাজমুল ভাইকে ধন্যবাদ জানাই। তবে, তিনি আরো একটি কথা জানান যে, বর্তমান প্রজন্ম জানে না আসলে আব্দুল হাফিজ (বাচ্চা মিয়া) কে ছিল, জানে না মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস!
এসময় উলিপুর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি আবু সাঈদ সরকার পৌর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি নাজমুল হক মানিককে নির্দেশ দেন অন্ততপক্ষে পৌরসভাধীন যতো আওয়ামীলীগ নেতারা ইতিপূর্বে ইন্তেকাল করেছেন সবার তালিকা করার জন্য। তিনি অারো জানান, ইনশঅাল্লাহ্ আব্দুল হাফিজ (বাচ্চা মিয়া)-র ২৬-তম মৃত্যু বার্ষিকী উলিপুর পৌর আওয়ামীলীগের ব্যানারে করবো। এসময় তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমরা আব্দুল হাফিজ (বাচ্চা মিয়া)-র পরিবারের কাছে লজ্জিত।
উলিপুর পৌর আওয়ামীলীরগের সহ-সভাপতি নাজমুল হক বলেন, বাচ্চা মিয়াকে বিগত ২৫ বছরে কোনোদিন এভাবে স্মরণ করা হয়নি! তিনি আরো জানান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি আবু সাঈদ সরকার এই স্মরণ সভায় উপস্থিত হওয়ায় তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। আমি দেখেছি, বাচ্চা মিয়ার সন্তানরা বাংলাদেশ অাওয়ামীলীগ ছাড়া অন্যকোনো রাজনৈতিক দলে কখনো যোগদান করেননি, কিন্তু তার পরেও কোনোদিন তাকে স্মরণ করা হয়নি, যার কারণ আমি জানিনা! এসময় নাজমুল হক মানিক রঙ্গপুর নিউজের নির্বাহী সম্পাদ ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক মারুফ আহমেদর নাম উল্লেখ্য করে তাকে অনুরোধ করেন তিনি যেনো বাচ্চা মিয়াকে নিয়ে স্টাডি করেন।
মুক্তিযুদ্ধের মহান সংগঠক, কুড়িগ্রাম মহুকুমা (বর্তমান কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলা)-র আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, আব্দুল হাফিজ (বাচ্চা মিয়া)-র ২৫তম মৃত্যু বার্ষিকী আজ।
তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণ অভ্যুত্থান ও ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। তার নেতৃত্বে রৌমারি থানার দৈ খাওয়া মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্প স্থাপিত হয়। তিনি ১৯৭৪ সালে আওয়ামী লীগের উলিপুর থানা শাখার সভাপতি ও ১৯৭৬ সালে কুড়িগ্রাম মহকুমা শাখার সভাপতি ও রংপুর জেলা শাখার সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি মুজিবনগর সরকারের কাস্টমস অফিসার ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাকে খুবই ভালবাসতেন এবং উত্তরবঙ্গের সকল রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সফরসঙ্গী করতেন। এছাড়াও তার ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক বন্ধু ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী মিজানুর রহমান চৌধুরী, মরহুম আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ। ১৯৯৫ সালের ২৭ জুন তিনি উলিপুরে নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন।
Leave your comments