উলিপুরে মুখ থুবড়ে পড়েছে ডিজিটাল সুবিধা। দীর্ঘদিন ধরে সরকারী দপ্তরের ওয়েব সাইটগুলো হালনাগাদ না হওয়ায় সঠিক তথ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে লোকজন। এ অবস্থাকে ডিজিটাল দেশের ডিজিটাল ব্যাবস্থার প্রতি চরম অবহেলা হিসেবে দেখছেন উলিপুরের সচেতন মহল। অবাধ তথ্য আদান প্রদানের বড় অন্তরায় ও তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ বলেও মতামত অনেকের। একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আসলে আমরা মুখেই ডিজিটাল হয়েছি, বাস্তবতা অনেক দূরে।”
গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উপজেলার সরকারী দপ্তরের বিভিন্ন ওয়েব সাইট ঘেটে দেখা যায় যে, জনগনের বন্ধু, আইনের রক্ষক পুলিশের বেহাল অবস্থা। উলিপুর থানার ওয়েব সাইটে পাওয়া যায়, ০৬ ফেব্র“য়ারী ২০১৬ তারিখে বিদায়ী অফিসার ইনচার্জ জমির উদ্দিনের নাম ও ছবি। অথচ তার পর এসে গেছেন আরও ২ জন অফিসার ইনচার্জ। থানায় বর্তমান অফিসার ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন।  তিনি অত্র থানায় যোগদান করেছেন ১৯ জুলাই ২০১৮ তারিখে। এসআই ও এএসআই পদে যাদের নাম দেখা গেছে তারা কেউ নেই অত্র থানায়। এমন কি অনেকেই কয়েক বছর আগে অন্যত্র বদলী হয়েছেন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)র ওয়েব সাইটে দেখা গেছে বিভিন্ন ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা এক স্থান থেকে অন্যস্থানে ১ বছর আগে বদলী হয়েছেন কিন্তু তাদের নাম ওই স্থানেই রয়ে গেছে।
উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরের অবস্থা আরও করুণ। উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে ১৩ আগস্ট ২০১৪ তারিখে যোগদান করে প্রকৌশলী স্বাগতম কুন্ডু অন্যত্র বদলী হয়েছেন ৩ নভেম্বর ২০১৬  তারিখ। তারপর সেখানে চলতি ও অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেছেন ৩ জন প্রকৌশলী। বর্তমানে উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত আছেন কে কে এম সাদেকুল আলম। তিনি যোগদান করেছেন ২৮ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো ওই দপ্তরের ওয়েব সাইটে রয়েছেন স্বাগতম কুন্ডু। যিনি বদলী হয়েছেন সাড়ে ৩ বছর সময়েরও আগে। এমন কি সকল কর্মকর্তা কর্মাচারীদের মোবাইল নম্বরও সেখানে রাখা হয়নি আজ অবধি।
উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অফিসের স্টেশন অফিসার হিসেবে ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখ পর্যন্ত অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেছেন লিডার আইয়ুব আলী। তার পর সেখাখে স্টেশন অফিসার হিসেবে ডেপুটেশনে থাকা নাজমুল হাসান দায়িত্ব পালন করছেন আজও। কিন্ত ওয়েব সাইটে স্টেশন অফিসার হিসেবে আইয়ুব আলীর নাম ও মোবাইল নম্বর ঝুলছে  প্রায় ৩ বছর থেকে। এ ব্যাপারে নামজুল হাসানের সাথে কথা বলে জানা যায়,  তিনি জানেন না ফায়ার সার্ভিসের নিজস্ব ওয়েব সাইটের কথা।
এমন দূরাবস্থা লক্ষ্য করা গেছে উপজেলার প্রতিটি দপ্তরের ওয়েব সাইটে।  এসব বিষয় নিয়ে ওই দপ্তর গুলোর কর্মকর্তাদের সাথে কথা হলে কেউই এ ব্যাপারে দায় নিতে রাজি নন। উপজেলা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দপ্তরের সহকারী প্রোগ্রামার জাহাঙ্গীর আলম জানান, ই নথির সার্বিক কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে। ওয়েব সাইট দেখার বিষয়টি স্ব স্ব দপ্তরের, আমি শুধু টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিচ্ছি। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল কাদের এর সেলফোনে কথা বলার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
Leave your comments