কুড়িগ্রাম ২০-০৮-২০২০ইং।

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি সোলার সিস্টেমের (সৌরবিদ্যুৎ) প্রায় ৮৫ লাখ টাকা তছরুপের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক ১৭ মে তদন্ত প্রতিবেদন দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর মহাখালী বরাবর প্রেরন করার তথ্য প্রকাশ পাওয়ার পরও  গত চার মাসে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর কার্যত কোন ব্যবস্থা  গ্রহন না করায় এলাকায় চরম  ক্ষোভ ও মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় জনগনের দৃষ্টি এখন দূর্নীতি তদন্ত রিপোর্ট চাওয়া দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের দিকে। এলাকায় গুন্জন উঠেছে অভিযুক্ত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রমান পত্র গায়েব করার জোড় তদবীর প্রচেষ্টা চালিয়েছেন।
সরেজমিন প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০১৮-২০১৯ ইং অর্থ বছরে গ্রামীন অবকাঠামো সংস্কার ও গ্রামীন অবকাঠামো সংরক্ষন সোলার সিস্টেম প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৮৫ লক্ষ টাকা অনুমোদিত উপকারভোগীদের তালিকা দেখিয়ে তা না দিয়ে আত্মসাত করা হয়েছে। তালিকাভুক্ত উপকারভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে দুর্নীতির তদন্ত করার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের যুগ্ম সচিব মো. আবু বকর সিদ্দিক ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক বরাবর পত্র প্রেরণ করেন। পরে জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ হাফিজুর রহমানকে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করেন। তদন্ত শেষে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তদন্ত প্রতিবেদন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর বরাবর প্রেরণ করেন।
তদন্ত প্রতিবেদনের ১৩ পৃষ্ঠার সকল ডকুমেন্ট হাতে আসার পর লক্ষ্য করা যায়, গত ১৭ মে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম তদন্ত প্রতিবেদন দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর বরাবর দাখিল করলেও এ সংক্রান্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহন করার কার্যত পদক্ষেপ নাই বলে হতাশা প্রকাশ করেছেন এলাকার ভুক্তভুগি মানুষ । তদন্ত প্রতিবেদনে টিআর ও কাবিটা প্রকল্পের মোট ৮৫ লক্ষ টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমানিত হলেও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর গত ৪ মাসেও দূর্নীতিগ্রস্ত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন মন্টুর বিরুদ্ধে বিধি ব্যবস্থা গ্রহন না করার অভিযোগ উঠেছে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে যথারীতি তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. বেজাউল করিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। বিষয়টি এখন অধিদপ্তরে রয়েছে।
দূর্নীতি ও সরকারি অর্থ তছরুপের ঘটনায় দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের যুগ্ম সচিব পরিচালক ( কাবিখা) মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক যিনি জনৈক জয়নাল আবেদীনের অভিযোগ পত্র আমলে নিয়ে তা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন তার সাথে যোগাযোপ ও সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। রবিবার (২০ সেপ্টেম্বর)দুপুড় ১২.৩০ মিনিটে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সবকিছু জেনে দুপুড় ২ টার পর ফোন দিয়ে জেনে নিতে বলেন।
উলিপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন মন্টুর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পর্কে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা যুগ্মসচিব আবু বক্কর সিদ্দিক  ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন মন্টুর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্ত রিপোর্টসহ সুপারিশ পত্র  গত ১৫-০৬-২০২০ইং দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রান মন্ত্রনালয় বরাবরে পাঠানো হয়েছে। এখন দূর্যোগ মন্ত্রনালয় এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিবেন।
উলিপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন মন্টু তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ও নাম পরিবর্তনের কারনে সৃষ্টি হয়েছে বলে সকল সাংবাদিকদের জানান।
Leave your comments