ফিরোজ কবির কাজলঃ
কুড়িগ্রামের উলিপুর হাট ঐতিহাসিক ভাবেই বহু পুরাতন ও ব্যাপক লোকসমাগম হতো বলে জানা যায়।পৌর শহরের মধ্যবাজার কাঁচাবাজারসহ চকবাজার ও বিভিন্ন সরকারী অর্থায়নে ব্যবসায়ীদের জন্য হাডশেড তৈরি করা হয়।
যা ধারাবাহিক ভাবে সংস্কার ও নির্মান কাজ পৌরসভা বাস্তবায়ন করলেও তা ইজারাদার দের খাজনা তোলার বন্দোবস্ত শর্তে পৌরসভা প্রতিবছর টেন্ডার এর মাধ্যমে ইজারা প্রদান করে আসছে। একবেলা দোকান করা চটি দোকানদার থেকে শুরু করে সকলেই অতিরিক্ত খাজনা নিয়ে অতীষ্ট।
পৌরসভার মেয়র তারিক আবু আলা চৌধুরী বিএনপি থেকে নির্বাচিত হয়। বিভিন্ন সময়ে ঢাকায় অবস্থান করায় দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেল মেয়র দিয়ে চলে পৌরসভার কার্যক্রম।
পৌর কাঁচাবাজার আরতদার ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের বারবার স্থান পরিবর্তন এবং অতিরিক্ত জামানতের কারণে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে ব্যবসায়ীদের মাঝে।খুচরা দোকানদারদের অভিযোগ তাদের ব্যবসার জায়গায় যখন তখন তুলে দিয়ে বসানো হচ্ছে অধিক টাকা দিতে পারে এমন মধ্যসত্বভোগীদের। বারবার স্থান্তর হওয়ার ব্যবসায়ীরা দিনে দিনে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে।অনেকে ব্যবসা ছেড়ে ঢাকা গাজীপুর গিয়ে রিকসা বা শ্রমিকের কাজ করে বহুত কষ্টে দিনাতিপাত করছে। খুচরা ৪৮ জন ব্যবসায়ীকে বন্দোবস্ত দেয়ার কথা বলে তুলে দিয়ে দুই বছরের ব্যবধানে তা আবার ভেঙ্গে নতুন করে শেডের ভিতরের অবকাঠামো পরিবর্তন করার নামে দোকান করা ব্যাবসায়ীদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। এই ৪৮ জন ব্যবসায়ীদের অনেকেই রাস্তা দখল করে দোকান সাজিয়ে ব্যবসা করছে আবার অনেকেই দোকানপাট হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে রাস্তায় রাস্তায় নেতাদের পিছনে কেদে কেদে ঘুরে ফিরে দিনশেষে হতাশা নিয়ে বাড়ি ফিরছে।খুচরা দুই ব্যবসায়ী আক্কাছ আলী ও হোসেন আলীর দোকানের সবজি কাচামাল সব ফেলে দেয়ার মত ঘটনা ঘটেছে।
মাছবাজার সংলগ্ন খুচরা কাচামাল শেডটি প্লট আকারে ভাগ করে কাচামাল আরতদারদের চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে,১লক্ষ ৫০হাজার টাকা জামানত দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য। ৩০ বৎসরেরও বেশী সময় ধরে করে আসা কাচামাল আরতদার  বৃটিশ গোলজার পৌরসভার নির্দিষ্ট ঘর থেকে উচ্ছেদ হওয়ার পর শোকে দুঃখে এখন শয্যাসায়ী।
আজগার আলী এবং ফুলবাবু মিয়া কাচামাল সমিতির সাঃসম্পাদক পৌরকর্তৃপক্ষের  বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেন, এই আরতঘর গুলো ২০০৭ সালে ৩০ হাজার টাকা করে জামানত দিয়ে ৬৮ পরে ৭২ এভাবে সংখা বারতে থাকে, বারতে থাকে জামানতের নামে কমিশনের অংক এবং কোটি কোটি টাকার ব্যবসা শুরু হয় আরতগুলোতে।
রৌমারী রাজিবপুর চিলমারী রাজারহাট থেকেও খুচরা ব্যবসায়ীরা উলিপুরে এসে মালামাল ক্রয় করে ফলে ব্যাপক প্রসার ঘটে এই আরতের। আজগার আলী বলেন, গত ২ বৎসর যাবত  পৌরঅফিস থেকে কেউ ঘড় ভারা নিতে আসেনা মুর্খসুখ্য ব্যবসায়ীরা তা গুরুত্ব দেয়নি। জাপান সরকারের জাইকা অর্থায়নে উলিপুর পৌরমার্কেট নির্মান কাজ চলছে। ফলে ব্যবসায়ীরা পৌরর নিজস্ব স্থান উন্নয়নের স্বার্থে ছেড়ে পুর্বের গরু হাট বর্তমান ধারাই হাটে সহকারী কমিশনার(ভূমি)’র সহযোগিতায় অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে আরত বন্দোবস্ত করে দেয়া হয়।
চলতি মাসের পৌরসভা প্যনেল মেয়র আনিচুর রহমানের নেতৃত্বে উলিপুর বাজার চলাকালিন সময়ে কাচাবাজার দোকানদারদের সাথে টিনশেড ব্যবসায়ীদের ঘড় উচ্ছেদ এবং নতুন করে ঘরবরাদ্দ ইস্যু নিয়ে কথাকাটি হয় বলে জানা গেছে।
পৌরসভার প্যানেল মেয়র আনিচুর রহমান জানান,পৌর মার্কেট নির্মানের জন্য নবনির্মিত মার্কেটির সামনের ২০টি দোকান কে মাছবাজার সংলগ্ন শেডটিতে প্লট আকারে হস্তান্তর করা হবে।ওই ২০জন ব্যবসায়ীকে ১লক্ষ ৫০হাজার টাকা করে জামানত দিতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল কাদের এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন,পরিস্থিতি ও সমসাময়িক ঘটনাবলীর প্রতিবেদন জেলা প্রশাসক বরাবরে পাঠানো হয়েছে। ডিসি স্যারের নির্দেশনা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে উলিপুর পৌর কাঁচাবাজার সমিতির ব্যানারে “দোকান উচ্ছেদ রক্ষা সংগ্রাম ” নামে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।দোকান উচ্ছেদ এবং বারবার শেড স্থান্তর করায় ব্যবসায়ীদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।এমনকি সংঘর্ষের মত ঘটনাও ঘটতে পারে।
Leave your comments