কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমোরসহ ১৬টি নদনদীর পানি বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে কুড়িগ্রামে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হয়েছে। তবে কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তাও ধরলা নদীর পানি কমার সাথে সাথে বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙন তীব্ররুপ ধারণ করেছে। ভাঙনের কবলে পড়েছে সারডোব, মোঘলবাসা ও নুনখাওয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। এছাড়া জয়কুমর, থেতরাই, কালিরহাটসহ আরো ১২টি স্পটে ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়েছে অন্তত ৫ শতাধিক পরিবার। বিলীন হবার পথে সারডোব বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের প্রায় ২০০ মিটার অংশ অংশ। ফলে এখানে ২০টি গ্রাম প্লাবিত হবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এদিকে কুড়িগ্রামের উলিপুরে চোখের নিমিষেই তিস্তা নদীর গর্ভে চলে গেল একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্থানীয় মানুষজনের উদ্যোগে লোহার এ্যাঙ্গেল ও কিছু টিন রক্ষা করা গেলেও অন্যান্য জিনিসপত্র মুহুর্তেই নদীতে তলিয়ে যায়।
জানা গেছে, উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের তিস্তা নদী বেষ্টিত জুয়ান সতরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সোমবার ভোর হতেই তিস্তার ভাঙনের কবলে পড়ে।
স্থানীয় মানুষজন জানান, আধা ঘন্টার মধ্যেই স্কুলঘরটি নদীতে চলে যায়। কিন্তু বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির লোকজন না আসায় স্থানীয় লোকজন কোন রকমে বিদ্যালয়টির এ্যাঙ্গেল ও কিছু টিন উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
এদিকে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে চরাঞ্চলের একমাত্র বিদ্যাপীঠটি নদী গর্ভে চলে যাওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়াও উপজেলার ব্রহ্মপূত্র নদ বিচ্ছিন্ন সাহেবের আলগা ইউনিয়নের চর ঘুঘুমারী কমিউনিটি ক্লিনিক, দৈ খাওয়ার চর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সুখের চর সরকারী প্রাথমিক ও আশ্রয়কেন্দ্র ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক শাহ্ বলেন, জুয়ান সতরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বিদ্যালয়ের টিনসেড ঘরসহ অন্যান্য আসবাববপত্র নিজের জিম্মায় রেখেছেন মর্মে আবেদন দিয়েছেন। পরবর্তিতে বিদ্যালয়টি পার্শ্ববর্তী কোন স্থানে স্থনান্তর করে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ব্যবস্থা করা হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান,ভাঙন রোধে জরুরি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বর্ষা মৌসুম শেষে ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী প্রতিরক্ষার কাজ করা হবে।
Leave your comments