ফিরোজ কবির কাজলঃ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে অবৈধভাবে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করছে
কিছু অসাধু বালু ব্যাবসায়ী। মোবাইল কোর্ট করে জরিমানা করা হলেও থামছে না ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে বালু উত্তোলন । এতে হুমকীর মুখে রয়েছে তীর রক্ষা বাঁধ,রাস্তা, ব্রিজ, মসজিদ, স্কুল, মাদ্রাসা ও শতশত বাড়িঘরসহ বহু স্থাপনা। নদীর পানি কমতে থাকলে প্রতি মৌসুমে উপজেলার কিছু অসাধু বালু ব্যবসায়ী
অনুমতি ছাড়াই ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে বালু উত্তোলন করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে
নিচ্ছে।স্থানীয়রা জানায়, হাতিয়া ইউনিয়নের গৌতম,মোন্নাফ আলী, রানু,বাবুসহ
একটি অসাধু চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে বালু উত্তোলন করে আসছে।
উত্তোলনকৃত বালু উলিপুরের পালের ঘাটে সংরক্ষন করে তা জেলার বিভিন্ন যায়গায়
বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা । অনুসন্ধানে জানা যায়,
উলিপুর,চিলমারী,রৌমারী উপজেলার অংশ
ব্রহ্মপুত্র নদকে ঘিরেই অবস্থিত। এখানে
প্রতিবছর নদের পানি কমতে থাকলেও বালু ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে
বালু উত্তোলন করে আসছে।
অথচ ২০১০ সালের বালুমহাল আইনে বলা আছে, বিপণনের উদ্দেশ্যে কোনো উন্মুক্ত
স্থান, চা-বাগানের ছড়া বা নদীর তলদেশ থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে
না। এ ছাড়া সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারেজ, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, অথবা আবাসিক এলাকা থেকে সর্বনিম্ন ১কিলোমিটার এলাকার মধ্যে বালু ও মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, অনন্তপুর বাজারের দক্ষিনে পালের ঘাটে অসাধু চক্রটি ব্রহ্মপুত্র নদ হতে ট্রলারযোগে বালু সরবরাহ করে সংরক্ষন করছে এবং ট্রাক্টর ও ট্রলিযোগে বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যেতে দেখা যায়। সংরক্ষিত বালুু দিনে-রাতে ট্রলি ও ট্রাক্টর দিয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করছে। বিকট শব্দের ট্রাক্টরগুলো বালু পরিবহনের কারণে রাস্তাগুলো চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে যাচ্ছে। হাতিয়া ইউনিয়নের রুহল আমিন,সফিয়াল,গিয়াস উদ্দিন, জহদ্দী,কাচুয়াসহ অনেকে বলেন ব্রহ্মপুত্র নদী ভাঙ্গনে হাতিয়ারপালেরঘাট,নীলকন্ঠ,নয়াডারাসহ অনেক গ্রাম নদীগর্ভে চলে গেছে। এভাবে নদ থেকে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে নদীর
গতিপথ পরিবর্তন হবে এবং গভীরতা বৃদ্ধি পেয়ে প্রবল ভাঙ্গনে যে কোন সময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত নদী ভাঙ্গনরোধে ডান তীর রক্ষার কক্রিটের বোল্ডার নদী গর্ভে চলে যাবে সেই সাথে, নদী সংলগ্ন -ব্রিজ,স্কুল, মাদরাসা, মসজিদ, হাট-বাজার ও শত শত বাড়িঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা বিলীন হয়ে যাবে।অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা প্রসঙ্গে বালু ব্যবসায়ী গৌতম জানান, আমরা
চিলমারী উপজেলার ফকিরের হাট সংলগ্ন কালির কুড়া নামক ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে বালু
উত্তোলন করে নিয়ে আসছি আমাদের উলিপুর উপজেলায় নয়। ব্রহ্মপুত্র থেকে বালু
উত্তোলনের অনুমতি প্রসঙ্গে বলেন চিলমারীর লোকেরা সেখান থেকে বালু উত্তোলন
করছে আমরাও করছি।সহকারী কমিশনার (ভূমি) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আব্দুল কাদের বলেন, উপজেলার বেশ কয়েকটি জায়গায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীর বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট
করে জরিমানা করা হয়েছে এবং এ অভিযান চলমান আছে।
Leave your comments