কুড়িগ্রামের উলিপুরে ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে হতদরিদ্রদের মাঝে ভিজিএফএর চাল বিতরনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে একাধিক ইউপি চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে হতদরিদ্রদের নামের তালিকা জমা না দিয়ে চেয়ারম্যানগণ নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিদের ভিজিএফএর চাল বিতরন করছেন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ করেছেন বিভিন্ন ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ নেতারা।
জানা গেছে, ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের ৭৬হাজার ২শ ৭৫টি কার্ডের বিপরীতে প্রায় ৭শ ৬৩  মেঃ টন চাল হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরন করা হবে। নিয়ম অনুযায়ী চেয়ারম্যানগণ হতদরিদ্রদের নামের তালিকা প্রস্তুত করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দিবেন। এরপর তা যাচাই-বাচাই করে ইউনিয়ন ভিত্তিক কার্ড প্রতি ১০ কেজি করে ত্রানের চালের বরাদ্দ দেয়া হবে। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে একাধিক চেয়ারম্যান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে তালিকা জমা না দিয়েই ইচ্ছামত নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিদের ত্রানের চাল বিতরন করে আসছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পিআইও অফিসের নির্দেশনা মোতাবেক ২৮ জুলাই এর মধ্যে ত্রানের চাল উত্তোলন করে তা বিতরন করতে হবে। কিন্তু উপজেলা খাদ্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২৮ জুলাই পর্যন্ত পান্ডুল, বজরাসহ আরও কয়েকটি ইউনিয়ন আংশিক চাল উত্তোলন করে তা বিতরন করছেন। এভাবে শেষ সময় এসে ঈদুল আযাহার ভিজিএফএর চাল বিতরনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এদিকে ভিজিএফ এর তালিকা প্রস্তুত না করে নিয়ম বর্হিভূত ভাবে চাল বিতরন শুরু করলে উপজেলার পান্ডুল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম ও সাধারন সম্পাদক সুধাংশু কুমার পাল মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ করেন। পান্ডুল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম জানান, ওই ইউনিয়নে ভিজিএফএর তালিকা প্রস্তুত ছাড়াই চেয়ারম্যান নিয়ম বহির্ভূত ভাবে নিজের ইচ্ছামত চাল বিতরন করছেন। তালিকা দেখতে চাইলেও চেয়ারম্যান তালিকা দেখাতে পারেনি। এমনকি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসেও তালিকা পাওয়া যায়নি। তিনি আরও বলেন, ওই ইউনিয়নে ৫ হাজার ৫৩টি কার্ডের বিপরীতে ৫০ মেঃ টন ৫শ ৩০ কেজি চালের বরাদ্দ পাওয়া গেলেও চেয়ারম্যান মাত্র ৩৪ মেঃ টন চাল উত্তোলন করে তা বিতরন করছেন।
পান্ডুল ইউনিয়নের দায়িত্বরত ট্যাগ অফিসার ও উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, আমি একটি ট্রেনিং এ থাকায় আমার প্রতিনিধিকে ওই ইউনিয়নের পাঠিয়েছি। বরাদ্দকৃত চাল উত্তোলনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার জানামতে ৩৪ মেঃ টন  চাল উত্তোলন করা হয়েছে। বাকী চাল এখনো উত্তোলন করা হয়নি। তালিকার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ ও পিআইও অফিসে তালিকা রয়েছে। তারপরও এ নিয়ে কথা উঠায় ইউএনও স্যার ও পিআইও সাহেবকে বিষয়টি জানিয়েছি। উনারা ঘটনাস্থলে গিয়ে সঠিক ভাবে চাল বিতরন হচ্ছে কি না তা পরিদর্শন করেছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজুদৌল্লার সাথে একাধিকার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
 অপরদিকে হাতিয়া ইউনিয়নে ৩ নং ওয়ার্ড কাচারিঘাট ছাবেদ আলী (গত ২৬ জুলাই) ভিজিএফএর চাল উত্তোলন করতে গেলে ১০ কেজি কম দেয় অভিযোগ করলে চেয়ারম্যান আবুল হোসেনের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন একপর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি করে সুবিধাভোগী তার জামা ছিড়ে যায়৷ এ সময় চেয়ারম্যান আবুল হোসেন জনগণের রোষানলে পড়েন পরে ছাবেদ আলীর কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে ৫শত টাকা দেন৷ হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন সঙ্গে প্রতিবেদক যোগাযোগ
করার চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি ৷
 উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো:আব্দুল কাদের যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়েছেন, তালিকা ডিএসবি ,ডিজিএফআই গোয়েন্দা শাখা ছাড়া এই তালিকা সাংবাদিকদের নিয়ম নাই তাই
দেয়া যাবেনা ! আপনার তালিকা প্রয়োজন হলে ডিসি স্যারের কাছে আবেদন করে তালিকা নিতে হবে ৷
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মো, রেজাউল করিম জানান, ভিজিএফের চাল কম দেয়া বা
অনিয়ম করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave your comments