মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশকে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে যুক্ত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের এক কংগ্রেসম্যানের প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ধরনের কথা বলাকে অত্যন্ত গর্হিত ও অন্যায় কাজ জানিয়ে
তিনি বলেছেন, আমরা এই অঞ্চলে শান্তিতে বিশ্বাসী। কারও ভূখণ্ড আমাদের লাগবে না। সোমবার (৮ জুলাই)
পাঁচ দিনের চীন সফরের বিষয়ে গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আমাদের নতুন সময়ের ভারপ্রাপ্ত
সম্পাদক মাসুদা ভাট্টির এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

সংবাদ সম্মেলনে মাসুদা ভাট্টি মার্কিন কংগ্রেসে বেন শারমেনের প্রস্তাবের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে
বলেন, ওই কংগ্রেসম্যান প্রস্তাব দিয়েছেন রাখাইনের যে মানচিত্রটি আছে তা বাংলাদেশের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া
হোক। এ বিষয়ে সুদানের উদাহরণ টেনে ওই কংগ্রেসম্যান প্রশ্ন রেখেছেন, অন্যান্য জায়গায় হলে এখানে হবে
না কেন? এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর মতামত জানতে চান তিনি।

এর জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, আমাদের যে সীমানা আছে আমরা তাতেই খুশি। এর বাইরে আর কোনও প্রদেশ
জুড়ে দেওয়ার ব্যাপার আমরা সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করি। এটা আমরা কখনোই নেবো না। মিয়ানমার তার
সার্বভৌমত্ব নিয়ে থাকবে, সেখানে বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের সীমানা জুড়ে দেওয়ার প্রসঙ্গ আসে কেন? এ
ধরনের কথা বলা অত্যন্ত গর্হিত ও অন্যায় কাজ বলে আমি মনে করি।

রাখাইনকে বাংলাদেশের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যাখ্যান

এ সময় ওই প্রস্তাবকারী কংগ্রেসম্যানকে যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে
রাখাইন প্রদেশে সার্বক্ষণিক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে, সেটাকে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত করবো কেন? এটা
আমরা কখনোই করবো না।’

তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী দেশ। সেখানে যখন এ ধরনের একটা ঘটনা ঘটেছে, সেখানকার
লোকজন আমাদের কাছে আশ্রয় চেয়েছে, মানবিক কারণে আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি। আশ্রয় দেওয়ার অর্থ
এটা নয়, আমরা তাদের রাষ্ট্রের একটা অংশ নিয়ে চলে আসবো। এই মানসিকতা আমাদের নেই। এটা আমরা
চাই না। প্রত্যেকটা দেশ তাদের সার্বভৌমত্ব নিয়ে থাকবে, এটাই আমি চাই।’

এ অঞ্চলে শান্তি কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশীদের সঙ্গে আমরা শান্তি চাই। যুক্তরাষ্ট্র যেখানেই সমস্যা
সমাধানের মোড়লগিরি করেছে সেখানেই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তাদের
রাখাইনকে জুড়ে দেওয়ার পরামর্শ না দিয়ে মিয়ানমার কীভাবে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে, সে বিষয়ে কাজ করার
তাগিদ দেন।

তিনি বলেন, এসব কথা না বলে বরং মিয়ানমার কীভাবে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবে, এই
কংগ্রেসম্যানদের সে বিষয়ে কাজ করা উচিত।

আরো পড়ুনঃ ১৭ জুলাই ঢাকা-বেনাপোল ট্রেন সার্ভিসের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

Leave your comments