বাংলাদেশ ক্রিকেট দল তাদের অধিকার ও বেতন ভাতা বৃদ্ধির লক্ষে  ১১ দফা দাবিতে শেষ পর্যন্ত ধর্মঘটের
ডাক দিয়েছেন তাঁরা ।

দেশের ক্রিকেট ঠিকমতো চলছে না—এই অভিযোগে সংবাদ সম্মেলনের ডাক দিয়েছিলেন বাংলাদেশের
ক্রিকেটাররা। দুপুরে শেষ পর্যন্ত মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নিজেদের
দাবিদাওয়া পেশ করলেন সাকিব-তামিম-মুশফিকসহ অন্য ক্রিকেটাররা। ১১ দফা দাবিতে শেষ পর্যন্ত
ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন তাঁরা।

এক একে সব ক্রিকেটার এসে ১১ দফা জানিয়েছেন আজ। দফাগুলো সংক্ষেপে দেওয়া হলো—

নাইম ইসলাম (১)

ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) সভাপতি ও
সাধারণ সম্পাদক কারা হবেন, সে সিদ্ধান্ত খেলোয়াড়দের নিতে দেওয়া হোক।

মাহমুদউল্লাহ (২)

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে কে কোথায় খেলবে, পারিশ্রমিক কত হবে, সে সিদ্ধান্ত
খেলোয়াড়দের নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে।

মুশফিকুর রহিম (৩)

বিশেষ বিপিএলে পূর্ণ সম্মতি আছে, তবে আগামী বছর থেকে ফ্র্যাঞ্চাইজি
পদ্ধতিতে খেলাতে হবে। বিদেশি ও দেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে দামের তারতম্য ঠিক করতে হবে।
বাইরের লিগগুলোর মতো ড্রাফটে কোন গ্রেডে রাখা হবে, সে সিদ্ধান্ত খেলোয়াড়কে নিতে দেওয়া
হোক।

সাকিব আল হাসান (৪-৫)

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের বেতন–ভাতা বাড়াতে হবে। ম্যাচ ফি অন্তত
৫০ ভাগ বাড়াতে হবে তবে, তাঁদের সবার ধারণা এটা এক লাখ টাকা করা হোক। খেলোয়াড়দের
অনুশীলন, জিম করার মাঠ ও সুযোগ বাড়াতে হবে। সারা বছরই কোচ, ফিজিও এবং ট্রেনার
নিয়োগ দিতে হবে। এবং তারা যে পরিকল্পনা দেবেন, সেটা যেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটাররা অনুসরণ
করতে পারে। এসব সুযোগ-সুবিধা এ মৌসুমে নিশ্চিত করা সম্ভব নয় সেটা তারা জানেন, তবে
আগামী মৌসুম থেকে এটা নিশ্চিত করতে হবে। অনুশীলন সুবিধা যেন শুধু ঢাকায় দেওয়া না হয়,
সব বিভাগের দল যেন নিজেদের মাঠেই সে সুবিধা পায়। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে মানসম্মত বল দিতে
হবে। জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের এ বলে মানিয়ে নিতে সমস্যা হয়। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলতে
গেলে যে আবাসিক হোটেলে রাখা হয় তা যেন উন্নত হয়, খাবারের মান যেন ভালো হয়। যাতায়াত
ভাতা হিসেবে ‘প্লেন ফেয়ার’ নিশ্চিত করতে হবে। যে হোটেলে রাখা হবে তাতে জিম ও সুইমিং পুল
যেন থাকে সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

এনামুল জুনিয়র (৬)

জাতীয় দলের চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড় সংখ্যা বাড়িয়ে ৩০ করতে হবে। তিন বছর
ধরে বেতন বাড়ানো হচ্ছে না, সেটা বাড়াতে হবে।

তামিম ইকবাল (৭)

বাংলাদেশি কোচদের গুরুত্ব দিতে হবে। বিদেশি কোচ ও দেশি কোচের মধ্যে
বেতনের বৈষম্য দূর করতে হবে। আম্পায়ারিংয়ের মান বাড়াতে হলে তাদের আর্থিক সুযোগ-সুবিধা
নিশ্চিত করতে হবে। দেশি ফিজিও ও ট্রেনারদের ক্ষেত্রেও তাই। মাঠকর্মীদের বেতনও বাড়াতে হবে।

এনামুল হক বিজয় (৮)

৫০ ওভার ও টি-টোয়েন্টিতে লিগ বাড়াতে হবে। বিপিএলের আগে আরেকটি
টি-টোয়েন্টি লিগ হওয়া জরুরি। জাতীয় লিগে আগে প্রথম শ্রেণির ম্যাচের সঙ্গে একটি এক দিনের
ম্যাচ খেলা হতো, সেটা চালু করা উচিত।

নুরুল হাসান (৯)

ঘরোয়া ক্রিকেটের একটি নির্দিষ্ট দিনপঞ্জিকা থাকতে হবে, যেন আগে থেকে
প্রস্তুতি নেওয়া যায়।

জুনায়েদ সিদ্দিক (১০)

প্রিমিয়ার লিগের বকেয়া টাকা যেন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পাওয়া যায়।

ফরহাদ রেজা (১১)

দুটির বেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি খেলতে না দেওয়ার বিধিনিষেধ তুলে দিতে হবে। জাতীয়
দল বা জাতীয় লিগে ব্যস্ত না থাকলে তাদের যেন অন্য কোথাও খেলার সুযোগ দেওয়া হয়।

সাকিব (সমাপ্তি)

আমাদের ঘরোয়া লিগের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগে অনেক সময় মাঠে নামার
আগেই খেলার ফল জানা যায়। টানা দু–তিন দিন বাজে সিদ্ধান্তে আউট হওয়ার পর এক দিন ভালো
বলে আউট হলে দেখা যায় একজন খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যায়। কিন্তু আমাদের পাইপলাইন
ঠিক রাখতে চাইলে এবং ভবিষ্যতের খেলোয়াড় নিশ্চিত করতে হলে এসবে নজর দিতে হবে। যত দিন
না এ দাবিগুলো পূরণ করা হচ্ছে, তত দিন কোনো ক্রিকেট কার্যক্রমে অংশ নেবেন না ক্রিকেটাররা।

 

আরো পড়ুনঃ কুড়িগ্রামের রৌমারীতে হাত-পা বাঁধা অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার

Leave your comments