রাজনৈতিক জীবনের অনেকটা সময় তাঁর কেটেছে ওই কার্যালয়ে। রাজধানীর নয়াপল্টনের ওই সড়কটায়
কেটেছে বহু সময়। কখনো মিছিলে, কখনো বিক্ষোভে। নয়াপল্টনে কানায় কানায় পূর্ণ সমাবেশ একসময়
অপেক্ষা করেছে সাদেক হোসেন খোকার জন্য। তিনি আসবেন, বক্তব্য দেবেন।

আজ বৃহস্পতিবারও নয়াপল্টনের ওই সড়ক ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। অপেক্ষা সাদেক হোসেন খোকার
জন্য। প্রিয় এলাকায় শেষবারের মতো নেওয়া হলো বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকাকে। বিশাল
জনসমাবেশের সামনে কথা বলেন তাঁর ছেলে ইশরাক হোসেন। তিনি বলেন, “আমি যেদিন আমার বাবার
সঙ্গে শেষ কথা বলি, সেদিন তিনি আমাকে বলেছেন, ‘তোমরা আমাকে নিয়ে কোনো আপস করবা না।’”

জাতীয় সংসদে জানাজার পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখার পর তাঁর মরদেহ নেওয়া হয় নয়াপল্টনে
বিএনপির রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে।

দুপুর ১টা ৪০ মিনিটের দিকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকার মরদেহ নেওয়া হয়
নয়াপল্টনে। দুপুর ১২টা থেকেই বিএনপির নেতাকর্মীরা জমায়েত হতে থাকেন। একসময় নাইটিঙ্গেল মোড়
থেকে ফকিরাপুল মোড় পর্যন্ত কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় মানুষে।

সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা

জানাজায় অংশ নেন সর্বস্তরের মানুষ। সেখানে ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। জানাজা পড়ান জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের আহ্বায়ক হাফেজ মাওলানা নেসারুল হক।

সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন বলেন, “আমি যেদিন আমার বাবার সঙ্গে শেষ কথা বলি, সেদিন তিনি আমাকে বলেছেন, ‘তোমরা আমাকে নিয়ে কোনো আপস করবা না। আমি নীতির পক্ষে সব সময় অটল ছিলাম। খালেদা জিয়া ও বিএনপির কথার বাইরে আমি কোনো কাজ করব না। আমি চাই না, সরকারের সঙ্গে আপস করে শেষ সময়ে কেউ আমাকে দালাল বলুক। তবে আমার মৃত্যুর পর তোমরা চেষ্টা করো আমার মরদেহ দেশে নিয়ে জানাজা ও দাফন করতে।’”

এ সময় ইশরাক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানান।

এ সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এ সরকার মিথ্যা মামলা দিয়ে তাঁকে কারাদণ্ড দিয়েছে। তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আজ আমরা সাদেক হোসেন খোকার প্রিয় রাজনৈতিক দলের সামনে তাঁর জানাজা পড়তে দাঁড়িয়েছি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ সরকারের অত্যাচারে-নির্যাতনে সারা দেশের মানুষ অতিষ্ঠ। আজ এ সময়ে আমরা আমাদের সহযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার জানাজা পড়ছি। তাঁর মৃত্যুতে যে শূন্যতা তৈরি হলো তা কখনো পূরণ হওয়ার নয়।’

তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রকে পুণরুদ্ধার ও দেশনেত্রীকে মুক্ত করার জন্য সবচেয়ে বেশি দরকার ছিল সাদেক হোসেন খোকাকে। কিন্তু তিনি বড় অসময়ে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করি, আল্লাহ যেন উনাকে জান্নাত দান করেন।’

Leave your comments