মোবাইল কিনে ফিরে হলোনা উলিপুরের আসিফের কুড়িগ্রামের উলিপুরের ছেলে আরিফুল ইসলাম আসিফকে (২০) গত বৃহস্পতিবার গাজীপুরের শ্রীপুরে দুর্বত্তরা গলাকেটে হত্যা করে। তার মরদেহ শনিবার রাতে নিজ গ্রামে নিয়ে এলে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

নিহতের মা আছিয়া বেগম জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ছেলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয়। মোবাইল
ফোনে আসিফ বলেছিল, এ মাসের বেতন পেয়েছি, পায়ের জুতা জোড়া ছিঁড়ে গেছে, নতুন জুতা কেনার
জন্য বাজারে যাচ্ছি। এখন যে চাকরি করছি সেখানে একটু কষ্ট আছে, নাইট ডিউটি করতে হয়। অন্য
ভালো জায়গায় নতুন চাকরির চেষ্টা করছি। আগামী মাসে বেতন পেলে নতুন মোবাইল ফোন কিনে বাড়িতে
ফিরব। ফোনে এগুলোই ছিল বাড়িতে মা ও ভাবির সাথে নিহত আরিফুলের শেষ কথা। এরপর থেকে তার
মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

জানা গেছে, ঢাকার গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার বহেরারচালা গ্রামের একটি কলাবাগানে আরিফুল
ইসলাম আসিফের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি স্থানীয় জনৈক হেলাল উদ্দিনের বাড়িতে
সহকর্মীদের সঙ্গে ভাড়া থেকে মিতালী কারখানায় চাকরি করতেন।

সূত্রমতে

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুই মাস আগে নিহত আরিফুল ওই কারখানায় চাকরি নেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কারখানা কর্তৃপক্ষ তাকে অক্টোবর মাসের বেতন পরিশোধ করে। বেতন নিয়ে
কারখানা থেকে বের হওয়ার পরই তিনি নিখোঁজ হন। পরদিন শুক্রবার সকালে স্থানীয় কড়াইতলা
কলাবাগানের শ্রমিকরা কাজ করতে এসে বাগানের পাশে রক্ত দেখতে পান। পরে পাশের একটি কূপে
কলাপাতার নিচে মরদেহটি দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গলাকাটা
মরদেহটি উদ্ধার করে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়।

শনিবার রাত ১০টার দিকে আরিফুল ইসলামের লাশ নিজ গ্রাম কুড়িগ্রামের উলিপুর পৌরসভার ৭নং
ওয়ার্ডের রামদাস ধনিরাম সরদারপাড়ায় পৌঁছালে তাকে এক নজর দেখার জন্য বাড়িতে ভিড় জমায়
এলাকাবাসী। সন্তানের লাশ দেখে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন বাবা আতাউর রহমান ও মা আছিয়া বেগম। কৃষক
পরিবারে জন্ম নেয়া নিহত আরিফুল ইসলাম তিন ভাই বোনের মধ্যে সকলের ছোট ছিলেন। তিনি ২০১৯
সালে উলিপুর এমএ মতিন কারিগরি ও কৃষি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।”

ফিরোজ কবির কাজল

আরো পড়ুনঃ ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ ভোর ৫টায় উপকূল অতিক্রম করেছে

Leave your comments