আমন্ত্রিত অতিথি ছাড়াই কুড়িগ্রাম উলিপুরে শুরু হলো তিনদিন ব্যাপী পিঠামেলা।

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ

ব্যাপক প্রচারণার চালানোর পড়েও  কুড়িগ্রাম উলিপুরে তিনদিন ব্যাপী পিঠামেলা’র শুরুটা হল উদ্বোধন অনুষ্ঠান ছাড়াই। রোববার (২৬ জানুয়ারি) বিকেলে উলিপুর শহীদ মিনার চত্বরে সাজানো মেলায় ছিলনা কোন দর্শক কিংবা আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ। ফলে আয়োজকরা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছাড়াই শুরু করেন মেলার কার্যক্রম।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনুষ্ঠানে সভাপতির পদ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি এবং অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ অনুষ্ঠানে যোগ দেননি। মেলা ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। বেসরকারি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘প্রবা’ অনুষ্ঠানের আয়োজক। পিঠামেলা উদ্বোধন করতে প্রধান অতিথি হিসেবে কুড়িগ্রাম-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক এম এ মতিন, বিশেষ অতিথি হিসেবে উলিপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হোসেন মন্টু ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল কাদেরের নাম থাকলেও তারা অনুষ্ঠানে আসেননি। পরে অনুষ্ঠান ছাড়াই আয়োজক কমিটি পিঠামেলার কার্যক্রম শুরু করে।

জানা যায়, এই শীতে বাঙালীদের ঐতিহ্যবাহী পিঠা নিয়ে পসরা সাজানো হয় শহীদ মিনারে। ৬য়টি ষ্টলে পিঠা দর্শন ও বিক্রয় ছাড়াও সন্ধ্যায় আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। আয়োজকদের সঙ্গে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মতবিরোধ থাকায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পন্ড হয়ে যায়। এছাড়াও প্রথমদিন মেলায় দর্শক সমাগম তেমনটা জমে উঠেনি। তবে সন্ধ্যায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল দর্শকদের ভীর।স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রবা’র মহাসচিব ও শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক এবং কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি আসাদুল হকের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করার কথা। তিনি চলতি মাসের ২৩ জানুয়ারি কোন কারণ ছাড়াই উলিপুর শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর উপজেলা কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন করে ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠনে মদদ দেন। এতে পুরাতন কমিটির সদস্যদের সাথে তার চরম মতবিরোধ দেখা দেয়। এমন অবস্থায় অনুষ্ঠান আয়োজনে আসাদুল হককে সভাপতিত্ব করায় নাখোশ ছিল গ্রুপটি। ফলে কোন্দল ও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ যোগ দেননি। এছাড়াও পূর্বানুমতি ছাড়াই আমন্ত্রনপত্রে সরকারি মনোগ্রাম ব্যবহার করায় উলিপুরে সর্বত্র ছিল আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়।প্রবা’র মহাসচিব ও শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক এবং কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি আসাদুল হক জানান, ১৪ মাস হয়েছে আমরা এলাকার উন্নয়নে সংগঠন খুলেছি। অতিথিরা না আসলে আমার কিছুই করার নেই। আর এই অনুষ্ঠানের সাথে জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের কোন সম্পৃক্ততা নেই। মেলা উদযাপন কমিটির আহবায়ক সরকার মাহফুজার রহমান বুলেট জানান, অতিথিরা না আসায় সন্ধ্যায় আমরা মেলার কার্যক্রম শুরু করি। তিনি আরো বলেন, সম্ভবত দলীয় কোন্দলের কারণে আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি।উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল কাদের জানান, আমন্ত্রনপত্রে সরকারি মনোগ্রাম ব্যবহারে আমাকে অবগত করা হয়নি। বিষয়টি আমি পরে জেনেছি। তবে, প্রশাসন সবসময় ভালো উদ্যোগকে সমর্থন করে। তিনি আরো বলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মিটিং থাকায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারিনি।অপরদিকে কুড়িগ্রাম-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক এম এ মতিন জানান, জরুরি মিটিং এ ব্যস্ত থাকায় পিঠা মেলায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারিনি। তবে তিনি বলেন, সমাজের যে কোন ভালো কাজের সঙ্গেই আমি আছি।

 

Leave your comments