বোয়ালখালী- কালুরঘাট সেতু দ্রুত নির্মাণের দাবিতে অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন বোয়ালখালীর
মুক্তিযোদ্ধারা। গতকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত পূর্ব কালুরঘাটে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এতে মুক্তিযোদ্ধা ছাড়াও সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ
অংশ নেন। এ কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে স্থানীয় সাংসদ মইন উদ্দিন খান বাদল বলেন, এ অঞ্চলের
প্রাণের দাবি নতুন কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন না হলে আগামী ডিসেম্বরে সংসদ থেকে সরে দাঁড়াবেন।

কালুরঘাট সেতু

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ৯ আগস্ট কর্ণফুলীর কালুরঘাটে দ্বিতীয় সড়কসহ রেলসেতু প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রী
নীতিগতভাবে অনুমোদন দেন। ২০১৮ সালে ৭ আগস্ট অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)
বৈঠকে প্রকল্পটি উঠলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রকল্প নিয়ে অধিকতর সমীক্ষার নির্দেশ দেন। সেই বৈঠক
শেষে তৎকালীন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল (বর্তমান অর্থমন্ত্রী) জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ
অনুযায়ী সমীক্ষার কাজ শেষ হলে প্রকল্পটি অনুমোদন পাবে। ব্রিটিশ আমলের ১৯৩০ সালে কালুরঘাট
রেলসেতুটি নির্মিত হয়। ১৯৫৮ সালে সেতুটি অন্যান্য যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। ১৯৯১
সাল থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষ কালুরঘাটে একটি দ্বিমুখী রেলওয়ে-কাম সড়ক সেতুর দাবি জানিয়ে
আসছেন। ১৯৯৭ সালে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ১০ টনের অধিক পরিবহন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে। চট্টগ্রাম
প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) এক গবেষণায় সাত মাত্রার ভূমিকম্পে সেতুটি ধসে পড়ার শঙ্কার কথা বলা
হয়।

স্মারকলিপি প্রদান

গতকালের অনশনে অংশগ্রহণকারীদের হাতে ছিল ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড। যাতে শোভা পাচ্ছিল ‘দাবি শুধু
একটাই, বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতুর দ্রুত বাস্তবায়ন চাই’। অনশন কর্মসূচিতে মুক্তিযোদ্ধা ও বিভিন্ন সংগঠনের
নেতারা বক্তব্য রাখেন।

এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। একই সঙ্গে দিনব্যাপী ছিল কবিগানের আসর।
কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী কর্ণফুলী নদীর
ওপর কালুঘাটে রেল-কাম সড়ক সেতু বাস্তবায়নে যে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন তার দ্রুত বাস্তবায়নের
দাবিতেই এ কর্মসূচি। এ সেতুটি হলে চট্টগ্রামের সামগ্রিক উন্নয়নের প্রসার ঘটবে। এ ছাড়া নগরের সঙ্গে দক্ষিণ
চট্টগ্রামবাসী দূরত্ব ও ভোগান্তি হ্রাস পাবে।

অনশন ভঙ্গ

বিকেল ৪টায় শরবত পান করিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অনশন ভঙ্গ করান চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য মইন
উদ্দিন খান বাদল। তিনি এ সময় বলেন, ‘চট্টগ্রামবাসীকে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সেতুর
নির্মাণের প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন। তিনি এ বিষয়ে আন্তরিক। সেতু নির্মাণে অর্থের জোগানও রয়েছে।’ ‘চট্টগ্রামের
গণমানুষের প্রাণের দাবিতে একাত্তরের রণাঙ্গনের সাথী মুক্তিযোদ্ধাদের অনশন কর্মসূচিকে স্বাগত জানিয়ে
সাংসদ বাদল আরো বলেন, এ সেতু না হলে আগামী ডিসেম্বরে সংসদ থেকে সরে দাঁড়াব।’ সমাবেশে উপজেলা
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার হারুন মিয়া, বোয়ালখালী-কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মো.
আবদুল মোমিনসহ বিভন্ন শেণি-পেশার মানুষ বক্তব্য দেন।

আরো পড়ুনঃ ঠাকুরগাঁওয়ে মাইক্রোবাস ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে একজন নিহত

Leave your comments