কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে কমিটি গঠন করার অভিযোগ উঠেছে। রাজাকার পরিবারের সন্তান, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি থেকে আসা সুবিধাবাদী নেতা-কর্মীদের দিয়ে কমিটি গঠন করার অভিযোগে উপজেলা আওয়ামীলীগের ৪-১২-১৯ বুধবারের কাউন্সিল অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। এর সাথে সদ্য গঠিত ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সকল কমিটিও স্থগিত করা হয়েছে।

কুড়িগ্রাম-৩ আসনের জাতীয় সংসদ জানান

সন্ধ্যায়, কুড়িগ্রাম-৩ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য এম এ মতিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, কেন্দ্র থেকে
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক ও সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক তাকে টেলিফোনে কেন্দ্রের
নির্দেশনা জানিয়েছেন। আগামী ৪ ডিসেম্বর উলিপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এ লক্ষে
বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।

থেতরাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী আব্দুর রফিক অভিযোগ করে বলেন, তাকেসহ দুজনকে সভাপতি পদে
দাঁড়ানোর সুযোগ দেয়া হয়নি। যে দুজনকে তারা সুযোগ করে দেন, তাদের মধ্যে সভাপতি পদে ভোটাভুটি হলে আব্দুল
জলিল ১৫৩ ভোট পেয়ে জয়ী হন। আর নেতাদের পছন্দের প্রার্থী বদিউজ্জামান ভোট পান মাত্র ৬টি। একই ভাবে সাধারণ
সম্পাদক পদে আনিছুর রহমান ভোট পান ১৫০টি। নেতাদের পছন্দের প্রার্থী রঞ্জিত ভোট পান ৯টি।

দলদলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে প্রার্থী হন কামরুজ্জামান রানা মুন্সি। তিনি ছিলেন একজন বিশেষ নেতার
পছন্দের প্রার্থী। তার বাবা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আতিয়ার রহমান মুন্সি। এছাড়াও তিনি গত ইউপি নির্বাচনে অংশ
নিয়ে নৌকা প্রার্থীর বিরোধীতা করেন। এ কারণে ওই কাউন্সিল অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায় কাউন্সিল পন্ড করে
দেয় স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।

দলের ত্যাগী নেতা

এলাকার নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন
কমিটি গঠনের শুরু থেকেই স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার পরিবারের সন্তান ও বিএনপি-জামাত থেকে আসা ব্যক্তিদের কমিটিতে
অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়া চলে। এছাড়া পদের প্রভাব খাঁটিয়ে, নিজস্ব লোকজনদের সভাপতি সম্পাদক সহ বিভিন্ন পদে অগণতান্ত্রিক
পন্থায়  নির্বাচিত করার ঘটনা ছিলো দলের তৃনমূলে ব্যাপক আলোচিত।

অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা কাউন্সিলে পছন্দের ব্যক্তিরা যাতে সভাপতি সম্পাদক পদে আসতে পারে-এজন্য কুড়িগ্রাম-৩ আসনের সংসদ সদস্য এম এ মতিন ওইসব কাউন্সিলে উপস্থিত থাকতেন। তিনি প্রত্যক্ষভাবে প্রভাব খাঁটিয়ে তার পছন্দের লোকজনদের নির্বাচিত করেছেন। উপজেলার পান্ডুল ও গুনাইগাছ ইউনিয়ন কমিটি গঠনে ব্যাপক অনিয়মের আশ্রয় নিলে, নেতা-কর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।

সাবেক সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেন তালুকদার বলেন, নেত্রীর নির্দেশে উপজেলার সকল কাউন্সিল স্থগিত করা হয়েছে। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে সকল অনিয়ম দুর করে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হোসেন মন্টুর সাথে মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। স্থানীয় সংসদ সদস্য (কুড়িগ্রাম-৩) এম এ মতিন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরাই কাউন্সিল স্থগিত চেয়েছিলাম। কেন্দ্র এসে দেখুক আমরা কি অনিয়ম করেছি।

ফিরোজ কবির কাজল

আরো পড়ুনঃ ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে উলিপুরে ৭৪ বস্তা চাউল আটক।

Leave your comments