কুড়িগ্রামে নার্সের মৃত্যুতে বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন করছে তার সহপাঠিরা। তাদের অভিযোগ
চিকিৎসক অমিত কুমার বসুর ভুল চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স হাজেরা আক্তার (২৪) এর অপারেশন জনিত
মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন করেছে নার্সরা। দাবি আদায়ে হাসপাতাল
তত্ত্বাবধায়ককে ঘন্টাব্যাপী অবরুদ্ধ। ২৭ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর সোয়া ২টা পর্যন্ত
হাসপাতালের ভিতরে ও বাইরে তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

হাসপাতালের লেবার ইনচার্জ নিলুফা ইয়াসমিন এবং ওটি ইনচার্জ জুলেখা জানান, গত বৃহস্পতিবার
(২৪ অক্টোবর) দুপুর দেড়টায় জেনারেল হাসপাতালে লেবার ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স হাজেরা
আক্তারের সিজার করেন হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা: অমিত কুমার বসু। সিজারে পূত্র
সন্তানের জন্ম হয়।

সিজারিয়ান সেকশনে ব্লিডিং বন্ধ না হওয়ায় এবং ইউরিন পাস না হওয়ায় ওইদিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে
চিকিৎসক অমিত কুমার বসু তাকে দ্বিতীয়বার অপারেশন করেন। এরপরও ব্লিডিং বন্ধ না হওয়ায় রাত
দেড়টায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। রোববার (২৭ অক্টোবর) সকাল
সাড়ে ৭টায় রংপুরে তার মৃত্যু হয়।

অভিযুক্তকে অপসারণের দাবি

এ ঘটনায় হাসপাতালে বিক্ষুব্ধ নার্সরা সকালে থেকে জড়ো হয়ে চিকিৎসক ডা: অমিত কুমার বসুকে
অভিযুক্ত করে তার অপসারণ সহ নানা দাবিতে শ্লোগান দেয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দফায় দফায়
নার্সদের সাথে বসে আলোচনা চালিয়ে যান। কিন্তু নার্সরা কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন অবাহত
রাখে। পরে দুপুর সোয়া ২টার দিকে বিক্ষোভকারী নার্সদের সাথে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সমঝোতা
হওয়ায় কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ তুলে নেয়া হয়।

এরপর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ও নার্সরা মৃত হাজেরা আক্তারের মরদেহ তার গ্রামের বাড়ী গাইবান্ধা
জেলা শহরের কিসামত মালিবাড়ী এলাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।

এ ব্যাপারে কথা হলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: আবু মো: জাকির-উল ইসলাম জানান, নার্সদের বিভিন্ন
দাবি-দাওয়া ছিল। নবজাতকের ভরণ-পোষণের দায়িত্বটি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এছাড়াও উদ্ভুত পরিস্থিতিতে
একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

ভুল অপারেশনে আরো রোগীর মৃত্যু

ভূক্তভোগীদের দাবি-গ্রীণলাইফ হাসপাতালের মালিক ডাঃ অমিত কুমার বসুর বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে একাধিক
সিজারিয়ান ভুল অপারেশনে রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। কিছু দালাল ও টাউট শ্রেণির মানুষ গ্রীণলাইফ
হাসপাতালে কৌশলে পাঠিয়ে দিয়ে অপারেশনের কমিশন গ্রহণ করে থাকে। এ কারণেই হাতুড়ে ডাক্তার
অমিত কুমার বসুর ভুল অপারেশনে এভাবে অহরহ ঘটছে রোগীর অকাল মৃত্যু। এ ঘটনায় সচেতন মহলে
দেখা দিয়েছে বিরুপ প্রতিক্রিয়া।

সচেতন মহলের দাবি-একটি বিষয়ের চিকিৎসক ডাঃ অমিত কুমার বসু। অথচ তিনি সকল রোগের
অপারেশন ও চিকিৎসা কিভাবে দিয়ে আসছেন? গ্রামীণ সহজ-সরল মানুষকে বোকা বানিয়ে তিনি
তার গ্রীণলাইফ হাসপাতালকে মর্গে পরিণত করেছেন। প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করছে বলে
অভিযোগ তাদের।

 

ফিরোজ কবির কাজলঃ

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের দাবি আদায়ের প্রেক্ষিতে ধর্মঘটের ডাক

Leave your comments