মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচন পেছানোর প্রস্তাব করেছেন।কিছু কিছু গণমাধ্যম বলেছে, হেরে যাওয়ার ভয়ে তিনি এবার নির্বাচন পেছাতে চাচ্ছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পেছাতে পারেন না, ট্রাম্প তা ভালোই জানেন।নির্বাচন পেছানোর ক্ষমতা কংগ্রেসের।হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভস ডেমোক্র্যাটদের দখলে।তাঁরা নির্বাচন পেছাবেন না, এটা জেনেও ট্রাম্প কেন এ কথা বলেছেন? মার্কিন ইতিহাসে নির্বাচন পেছানোর খুব একটা দৃষ্টান্ত নেই।তবু ট্রাম্প মাত্র একবার এ কথা বলে হইচই ফেলে দিয়েছেন।একদিন পর আবার তিনি যথাসময়ে ভোটের কথা বলেছেন, সঙ্গে যোগ করেছেন, পোস্টাল ভোটে গণতন্ত্র ব্যাহত হয়?এটা রাজনীতি। ট্রাম্প খেলছেন।ট্রাম্প স্মার্ট প্লেয়ার।সদ্য ডেমোক্র্যাট কেউ একজন বিতর্ক বন্ধের কথা বলেছেন।ট্রাম্প সঙ্গে সঙ্গে বলেছেন, বাম ডেমোক্র্যাটরা বাইডেনকে বাঁচাতে বিতর্ক বন্ধ করতে চায়।বিতর্কে বাইডেন ধরাশায়ী হবেন।প্রথা অনুযায়ী নির্বাচনের আগে প্রধান প্রার্থীদের মধ্যে তিনটি বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।এ মাসেই ডেমোক্র্যাট কনভেনশন।বাইডেন এখনো তাঁর ভাইস-প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দেননি, এ সপ্তাহে দেবেন।এই পদে ক্যালিফোর্নিয়ার সিনেটর কমলা হ্যারিসের নাম শোনা যাচ্ছে।তবে ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত কিছুই চূড়ান্ত নয়।বাইডেন আগেই ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁর রানিং মেট হবেন একজন নারী। কে সেই ভাগ্যবতী? বাইডেনের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী যথেষ্ট স্মার্ট ও গ্রহণযোগ্য না হলে এবারের নির্বাচন ‘পানসে’ হয়ে যাবে।বাইডেন প্রায় সব জরিপে এগিয়ে আছেন।হয়তো তিনি এগিয়ে থাকবেন, কারণ মিডিয়া তাঁর পক্ষে।নির্বাচনে জিতবেন ট্রাম্প। ২০১৬-তে তাই ঘটেছিল।প্রায় সব জরিপে হিলারি ডবল ডিজিট ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন।তবু হেরেছেন।ট্রাম্প এসব জরিপকে ‘ফেক পোল’ আখ্যায়িত করেন।ডেমোক্র্যাটরা ‘ইলেকটোরাল কলেজ’ পদ্ধতি বাতিল করতে চান।নির্বাচন এলে এমন সব কথাবার্তা ওঠে।সাম্প্রতিক সময়ের নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটন ও আল গোর পপুলার ভোটে জিতেও নির্বাচনে হেরেছেন, ‘ইলেকটোরাল কলেজ’ পদ্ধতির কারণে।ডেমোক্র্যাটরা তাই এর বিপক্ষে।মার্কিন রাষ্ট্রের রূপকাররা ছোট-বড় স্টেটের সমান গুরুত্ব বজায় রাখতেই এ পদ্ধতি চালু করেন এবং এটি উঠে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলন এখনো ঢিমেতালে চলছে।এর কোনো শেষ নেই।সঙ্গে যোগ হয়েছে, ‘এন্টিফা’ আন্দোলন।হয়তো নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। ডেমোক্র্যাটরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।একই সঙ্গে অরাজকতাও বাড়ছে।ডেমোক্র্যাটরা পুলিশ ডিফেন্ডিংয়ের পক্ষে, বাইডেন বিপক্ষে।ডেমোক্র্যাটদের পুলিশের বিপক্ষে অবস্থান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করছে।ট্রাম্প এখন চীনের বিরুদ্ধে বলছেন।করোনাভাইরাসকে তিনি স্পষ্টভাবে ‘চীনা ভাইরাস’ বলছেন।মার্কিনিরা ধীরে ধীরে অ্যান্টি-চীন হচ্ছেন। ট্রাম্প পুরোপুরি অ্যান্টি-চীন অবস্থানে।ডেমোক্র্যাটরা সম্ভবত এখনো হাওয়া বুঝতে পারেননি।চীন এবারের নির্বাচনে একটি প্রধান ইস্যু হতে পারে।রিফিউজি অনুপ্রবেশ, ইসলামি সন্ত্রাসবাদ, অবৈধ অ্যালিয়েন অ্যান্ট্রি, ইন্টারেস্ট রেট, শিক্ষার্থী ঋণ, নারী অধিকার, ক্লাইমেট চেঞ্জ, মাস্ক পরা বা না পরা; করোনায় এত মৃত্যু; ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার, চীন-এ সবই এবারের নির্বাচনী ইস্যু।স্টিমুলাস, ওয়াল স্ট্রিট তো আছেই।অর্থনীতি ভালো থাকলে ট্রাম্পের জন্য সুবিধা।বিপদে পড়ে মানুষ যখন পুলিশে কল দেয়, তখন কাউকে বুঝিয়ে দিতে হয় না যে, পুলিশের গুরুত্ব কতটা।চলমান পুলিশবিরোধী আন্দোলন বাইডেনকে পথে বসিয়ে দিচ্ছে।কালোদের প্রতি সহানুভূতি থাকলেও মাঝে মধ্যে অরাজকতা বা নিত্যদিন আন্দোলনে মানুষ বিরক্ত।সবাই জানতে চাইছে এর শেষ কোথায়? ডেমোক্র্যাটরা ভাবছে, এই আন্দোলন তাঁদের হোয়াইট হাউসে নিয়ে যাবে। বাস্তবে কিন্তু উল্টোটাও ঘটতে পারে।
Leave your comments