ফিরোজ কবির কাজলঃ
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে দেশের অন্যান্য কারাগারের মতো কুড়িগ্রাম কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ৫৭ জন কয়েদীর নাম কারা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
তিন দিন আগে পাঠানো এই তালিকার ৫৭ জনের মধ্যে ৬ মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ১৮ জন, ১ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ২৮ জন এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার পর ২০ বছরের ঊর্ধ্বে কারাগারে আছেন এমন ১১ জনের নাম রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা কারাগারের জেলার লুৎফর রহমান।
তিনি জানান, জেলা কারাগারে বন্দিদের রাখার জন্য ৪টি পুরুষ ও ২টি নারী ওয়ার্ড রয়েছে। ধারণক্ষমতা ১৬৩ জন। এরমধ্যে পুরুষ বন্দি ধারণক্ষমতা ১৪৫ জন। আর নারী বন্দি ধারণক্ষমতা ১৮ জন। অথচ মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) বিকেল পর্যন্ত বন্দি ছিল ৭০৬ জন। এদের মধ্যে হাজতি রয়েছেন পুরুষ ৫৭০ ও মহিলা ২৬ মোট ৫৯৬ জন। আর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদীর মধ্যে পুরুষ ১০৭ এবং মহিলা ৩ মোট ১১০ জন রয়েছেন।
এছাড়া মহিলাদের সাথে ৬ বছরের কম বয়সী ৫ শিশু রয়েছে। তারপরও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা ও মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। নতুন বন্দিদের কারাগারের ভিতরে ঢোকানোর আগে প্রধান গেটে সাবান ও হ্যান্ড ওয়াশ দিয়ে ভালো করে হাতমুখ ধোয়ানো হচ্ছে। শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এভাবে প্রাথমিকভাবে তার সুস্থতার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর ভিতরে ঢোকানো হচ্ছে. এছাড়া কারাগারের রন্ধনশালা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি খাবারসমূহ ভালোভাবে সিদ্ধ হওয়ার পর পরিবেশন করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর এসএম আব্রাহাম লিংকন বলেন, এখানকার কারাগারে ধারণক্ষমতার ৪ গুণেরও বেশি বন্দি রয়েছে। এতে স্বাভাবিকভাবে কিছু সমস্যা হচ্ছে। সারাদেশে কমবেশি একই রকম অবস্থা বিরাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী কারাবন্দীদের তালিকা তৈরি এবং এ বিষয়ে রূপরেখা করতে বলেছেন। এছাড়া তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন জঘন্য ও দুর্ধর্ষ অপরাধী ছাড়া অন্যান্যদের বিষয় বিবেচনা করা যেতে পারে।
পাবলিক প্রসিকিউটর  আরও বলেন, তিনি খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, জেলা কারাগারে গত ২৫ মার্চের পর থেকে এ পর্যন্ত ৭০ জন বন্দি এসেছেন। আর ২৫ মার্চের পর থেকে কারো জামিন হয়নি। সেইসাথে নতুন বন্দিদের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করার জন্য তাদের আলাদা রাখার ব্যবস্থা নেই। এজন্য বিশেষ ব্যবস্থায় জামিনযোগ্য অপরাধে কারাগারে আসা বন্দিদের জামিন দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।
Leave your comments