প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জীবন বদলে দিচ্ছে উপবৃত্তির টাকায় বড় হওয়ার স্বপ্ন এখন তাদের দুই চোখে

প্রতিবন্ধী লিমা আক্তার ক্রাচে ভর দিয়ে স্কুলে যান। ৪ বছর বয়সে ফুপুর সাথে রাস্তা পর হতে গিয়ে ট্রাকের
নিচে পড়ে এক পা হারান। চলাচল করতে না পারায় তার লেখাপড়া প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু সরকারের
প্রতিবন্ধীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি বদলে দেয় তার জীবন। লিমা এখন ক্রাচে ভর দিয়ে স্কুলে যায়। উপ বৃত্তির
টাকায় পড়ার খরচ জুগিয়ে নতুন উদ্যমে লেখাপড়া শুরু করেছেন। স্বপ্ন দেখছেন তার শারীরিক
অক্ষমতাকে জয় করে জীবনে প্রতিষ্ঠা পাবার।

প্রতিবন্ধী 

লিমা কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী বহুমুখী বালিকা বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়েন। এই স্কুলের
প্রধান শিক্ষক মো: নাজমুল হক মিঠু জানান, লিমা এখন লেখাপড়ায় আগের চেয়ে অনেক মনোযোগী। তার
ফলাফলও আগের চেয়ে ভালো। লিমার মতো আরেক প্রতিবন্দী শিক্ষার্থী রেজোয়ান হোসেন। পড়েন
খলিলগঞ্জ স্কুল এন্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণিতে। এই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ রীতা দেব বলেন, রেজোয়ান হাঁটতে
পারেনা। স্কুলে আসতে কষ্ট হতো। এখন বৃত্তি পাবার পর রিক্সায় স্কুলে আসেন। লেখাপড়ায় তার যথেষ্ট
আগ্রহ দেখে মনে হয় সে প্রতিবন্ধীতাকে জয় করে ভালো কিছু করবে।

কুড়িগ্রাম জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলায় ১ হাজার ৪৭০ জন প্রতিবন্ধী
শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে ৫০০ টাকা, মাধ্যমিক পর্যায়ে ৬০০ টাকা, উচ্চ
মাধ্যমিক পর্যায়ে ৭০০ টাকা ও উচ্চতর স্তরে মাসিক ১ হাজার ২০০ টাকা হারে উপবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে।
চলতি অর্থ বছরে এ খাতে ১ কোটি ২৭ লাখ ৩৫ হাজার ৬০০ টাকা বরাদ্দ রয়েছে।

সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো: হাবিবুর রহমান বলেন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি সরকারের
একটি যুগান্তকারী কর্মসূচি। এই কর্মসূচি চালুর পর প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরাও নিয়মিত স্কুল-কলেজে যাচ্ছে।
ভালো ফলাফলও করছে। লেখাপড়া করে প্রতিষ্ঠিত হবার স্বপ্ন দেখছে অনেক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী।

জেলা সমাজ সেবা অফিসের উপ পরিচালক মো: রোকোনুল ইসলাম জানান, জেলার প্রত্যন্ত এলাকায়
শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করে উপবৃত্তির আওতায় আনা হচ্ছে। যাতে এইসব
শিক্ষার্থী মূলধারার সাথে একই সঙ্গে নিজেদের বিকশিত করতে পারে।

 

ফিরোজ কবির কাজল

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের দুর্দান্ত জয় ভারতের সাথে

Leave your comments